Home বাংলাদেশ বাবার মরদেহ ফেলে পালালেন সন্তানরা পাওনাদারদের চাপে

বাবার মরদেহ ফেলে পালালেন সন্তানরা পাওনাদারদের চাপে

9

বাবার মরদেহ ফেলে পালালেন সন্তানরা পাওনাদারদের চাপে

অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আব্দুল আজিজ মৃধার (৭০) মরদেহ ফেলে পালিয়ে গেছেন দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী-সন্তানরা পাওনাদারদের চাপে। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ ঘণ্টা পর স্কুলশিক্ষকের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।

জানা যায়, উপজেলা সদরের রায়েন্দা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ চত্বরে বুধবার (১২ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে শিক্ষক আজিজের জানাজার সময় সেখানে পাঁচ জন পাওনাদার এসে হাজির হন। তারা মৃতের দ্বিতীয়পক্ষের সন্তানদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে পণ্ড হয়ে যায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের জানাজা।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

এমন পরিস্থিতিতে আজিজের দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানরা মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তার মরদেহ পড়েছিল রায়েন্দা কেন্দ্রীয় মসজিদে। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিবারের লোকদের খুঁজে এনে বেলা আড়াইটার দিকে জানাজা সম্পন্ন করে মরদেহ তুলে দেয়া হয় প্রথম স্ত্রীর সন্তানের হাতে।

এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানান, উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের আব্দুল আজিজ মৃধা তাফালবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসরে যান। তার দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে তিনি বসবাস করতেন উপজেলা সদরের পাঁচরাস্তা এলাকায়। প্রায় ছয় মাস ধরে দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ছিলেন আব্দুল আজিজ।

দ্বিতীয় স্ত্রী-সন্তানদের চাপে বাবা আমাদের কোনো খোঁজ নিতেন না। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর কৌশলে তার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করে নেন তারা। বাবার কোনো ঋণ পরিশোধ করেনি। জানাজার সময় ৫ পাওনাদার এসে টাকা দাবি করলে দ্বিতীয় ঘরের সন্তানরা মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান। পরে বেওয়ারিশ হিসেবে মরদেহ দাফনের জন্য স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত নেয়। উপজেলার মালিয়া আল-ফালাহ্ মাদরাসার কবরস্থানে তার কবর প্রস্তুত করা হয়েছিল। পরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজের মধ্যস্ততায় পাওনাদারদের ঋণ পরিশোধে আশ্বস্ত করার পর জানাজা সম্পন্ন হয়। বাবার মরদেহ আমাদের গ্রামের বাড়িতে দাফনের ব্যবস্থা করেছি বলে জানান আব্দুল আজিজের প্রথম সংসারের বড় ছেলে মতিয়ার রহমান।

ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে বিষয়টি সমাধান করে মরদেহ জানাজা ও দাফনের জন্য বলা হয়েছে। পাওনাদাররা যাতে তাদের টাকা পায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুর-ই আলম সিদ্দিকী।